বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে নতুন শিক্ষাক্রম




প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব শিক্ষানীতি রয়েছে। সেই শিক্ষানীতির আওতায় থাকে শিক্ষাক্রমসহ নানাবিধ বিষয়। দেশের শিক্ষানীতি পরিবর্তন পরিবর্ধন করতে দীর্ঘ সময় লাগলেও শিক্ষাক্রম সময়ের প্রয়োজনে বা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে স্বল্প সময়ে পরিবর্তন বা সংযোজন বিয়োজন করা হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন করা হয়েছে, যদিও পূবেই এটি বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও করোনা (কোভিড-১৯) এর কারণে ২০২৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার।





বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে ২০২৩ সালের নতুন শিক্ষাক্রম:  

১। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম ১ম, ২য় ও ৬ষ্ঠ, ৭ম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন হচ্ছে।

২। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ৩য়, ৪র্থ ও ৮ম, ৯ম শ্রেণিতে বাস্তবায়িত হবে।

৩। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ৫ম ও ১০ম শ্রেণিতে বাস্তবায়িত হবে।

৪। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে শুধু একাদশ শ্রেণিতে বাস্তবায়িত হবে।

৫। ২০২৭ শিক্ষাবর্ষে শুধু দ্বাদশ শ্রেণিতে বাস্তবায়িত হবে।

৬। প্রাক-প্রাথমিক হচ্ছে দুই বছরের, যা ২০২২ পর্যন্ত ছিলো এক বছর।

৭। প্রাক-প্রাথমিকে থাকছে না কোনো সরকার নির্ধারিত বই, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই পড়াবেন তাঁদের নিজেদের মতো।

৮। প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত থাকছে না কোনো পরীক্ষা। ব্যবস্থার পরিবর্তনের কারণে শ্রেণিতে শেখানোর উপর ভিত্তি করে হবে শিক্ষার্থী মূল্যায়ন।

৯। বই থাকছে-     প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ০৩টি।

                             চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন বিষয়ের ০৮টি।

                             ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত থাকবে অভিন্ন বিষয়ের মোট ১০টি।

১০। গতানুগতিক পরীক্ষার বাইরে মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন সামষ্টিক উপায়ে।

১১। উঠে যাচ্ছে পিইসি/ইবতেদায়ী ও জেএসসি/জেডিসি নামের পাবলিক পরীক্ষা। তাই আর শিক্ষার্থীদের পোহাতে হবে না এই ঝামেলা।

১২। শিখনকালীন মূল্যায়নের ধরন হচ্ছ এসাইনমেন্ট, উপস্থাপন, যোগাযোগ এবং হাতে কলমে।

১৩। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ আর সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৪০ শতাংশ।

১৪। নবম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৫০ শতাংশ আর সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৫০ শতাংশ।

১৫। একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৩০ শতাংশ আর সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৭০ শতাংশ।

১৬। এসএসসি পরীক্ষা আরে আগের মতো ৯ম-১০ম শ্রেণির বই মিলিয়ে হবে না, শুধুমাত্র ১০ম শ্রেণির বই ও সিলেবাস অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে শিক্ষার্থীদের ১ম পাবলিক এই পরীক্ষা।

১৭। মাধ্যমিক পর্যায়ে থাকছে না আর আলাদা আলাদা ৩টি বিভাগ। এই পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা অভিন্ন বিষয় অধ্যায়ন করবে।

১৮। ২০২৩ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষার্থীরা বিভাগ (বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা) পছন্দ করতে পারবে একাদশ শ্রেণিতে।

১৯। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে অনুষ্ঠিত হবে আলাদা ২টি পরীক্ষা; এই দুই শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয়ে রেজাল্ট দেওয়া হবে এইচএসসি পরীক্ষার।

২০। উঠে যাচ্ছে সৃজনশীল ও গ্রেড পদ্ধতি।

২১। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে ০৩টি স্তরে-

প্রথম স্তর : এলিমেন্টারি (প্রাথমিক) লেভেল।

                   দ্বিতীয় স্তর : মিডেল (মধ্যম) লেভেল।

                   তৃতীয় স্তর : এক্সপার্ট (পারদর্শী) লেভেল।

২২। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে দুই দিন; যা ইতোমধ্যে আগস্ট’ ২০২২ থেকে কার্যকর হয়েছে।



 

Post a Comment

Previous Post Next Post